দুজন মানুষ একসঙ্গে থেকেও কেন দাম্পত্য জীবনে সুখী হয়না?

চোখের সামনে একটা জিনিস সব সময় থাকলে স্বভাবতই মানুষ তার মূল্য দিতে ভুলে যায়...

গ্রামের কোন মানুষকে যদি জিজ্ঞেস করা হয়- ‘আপনি পুকুরে আনন্দ নিয়ে শেষ কবে গোসল করেছেন?’ সে তখন হাসি দিয়ে বলবে- ‘পুকুরে গোসল করার মাঝে আবার আনন্দের কি আছে?’

এটাই সত্য, কারণ তার চোখের ভিউতে সবসময় পুকুরের বসবাস। তাই পুকুর ব্যাপারটা তার কাছে স্পেশাল না।

মানুষের ক্ষেত্রেও এমনটা ঘটে। সারাক্ষণ চোখের সামনে একটা মানুষ থাকলে তার মূল্য বুঝা যায়না। একই ছাদের নিচে দুজন মানুষ বসবাস করেও তাদের মাঝে ভালোবাসা থাকে না। ছেড়ে যাওয়াতে বাঁধা থাকে, তাই কেউ কেউ ছেড়ে যেতে পারেনা।

একই বিছানায় ঘুমিয়েও দুইটা মানুষের মাঝে আলোকবর্ষ দূরত্ব তৈরী হয়। চোখ বন্ধ করে দুজন মানুষ কি ভাবছে তা দুজনের কেউই জানেনা। আগের মতো আর শেয়ার করাও হয়না। একে অপরের প্রতি অভিযোগ বাড়তে থাকে। সুন্দর সংসার ডিভোর্সে পরিণত হয়।

অভিযোগ জমতে দেওয়া উচিৎ না। রাগ অভিমান হচ্ছে কাশির মতো, ঠিক সময়ে ঝেড়ে ফেলতে হয়। নইলে বুকের ভেতর আটকে থাকে। অভিযোগ ঝেড়ে ফেললে সম্পর্কের একটা ভেরিয়েশন আসে। সম্পর্কের ডেফিনেশন বদলে যায়।

সুখে থাকার জন্য সম্পর্কের ভেরিয়েশনটা খুবই জরুরী। কবুল বললে কিংবা সাতপাকে বাঁধা পড়লে বড়জোর বিয়েটা হয়, কিন্তু বিয়ে হলেই সব শেষ হয়ে যায়না। ভালোবাসতে হয়, প্রতিদিন একটু একটু করে ভালোবেসে সম্পর্কটা বাঁচিয়ে রাখতে হয়।

মানুষের যেমন বেঁচে থাকার জন্য অক্সিজেন প্রয়োজন, তেমনি সম্পর্কেরও বেঁচে থাকার জন্য অক্সিজেন প্রয়োজন। সম্পর্কের অক্সিজেন ‘ভালোবাসা’।
.

কলমেঃ খায়রুল ইসলাম